Moon

চাঁদ – অনেক সময় নস্টালজিক, অনেক সময় সুন্দরের প্রতীক আবার অনেক সময় আরো অনেক কিছু। এই চাঁদ আবার বিজ্ঞানের যেমন একটি বিস্ময় আবার অনেক সময় ষড়যন্ত্রের আধারও বলা যেতে পারে। যেমন চাঁদে মানুষ যাওয়ার ব্যাপারটা। চন্দ্র অভিযানের সত্যতা নিয়ে আমাদের বাংলাদেশীজমেই একটি ইন্ভেস্টিগেটিভ পোস্ট দেয়া হয়েছিল বেশ আগেই। কিন্ত এই চাঁদ যে কত রহ্স্যের আর আধার তা কি আর চাদের দিকে তাকিয়ে বলা যায়? দূর থেকে জ্বলজ্বলে এই চাঁদকে আমরা দেখেই যায় কিন্তু এর পেটে লুকিয়ে আছে নানা রকমের রহস্যের ঝুলি। তারই কিছু নিয়ে আজকের এই পোস্ট।

চৌম্বক ক্ষেত্রঃ
চাঁদের সবচেয়ে বড় রহস্যের ব্যাপার হলো চাদের চৌম্বক ক্ষেত্র। চাঁদের আদপে কোন চৌম্বক ক্ষেত্র নেই। কিন্তু ১৯৬০ সালে নভোচারীদের আনা এবং ১৯৭০ সালে পাওয়া চাদের কয়েকটুকরো পাথর পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছিল সেই পাথরগুলোর চৌম্বক ক্ষেত্র আছে। তাহলে কথা হচ্ছে চাঁদে যদি সত্যিই কোন চৌম্বক ক্ষেত্র না থেকে থাকে তাহলে পাথরগুলো কারা রেখে গিয়েছিল চাঁদে ? এলিয়েনরা? সেটাও তো এখন পর্যন্ত সম্ভব না বা সম্ভব হলেও প্রমান পাওয়া যায়নি। এ নিয়ে ব্যাপক গবেষনার পর বিজ্ঞানীরা পরে বের করতে সক্ষম হয়েছিলেন যে চাদে আসলে আগে চৌম্বক ক্ষেত্র ছিল কোন এক সময়ে। তবে কি কারনে চাঁদের সেই চৌম্বক ক্ষেত্র এখন গায়েব হয়ে গিয়েছে তা এখনও আমাদের পৃথিবীর বিজ্ঞানীরা বের করতে পারেন নি। একদল বিজ্ঞানী আবার দাবি করছেন যে চাদ আসলে আমরা যা ভাবি তা না। চাঁদ হলো শুধু একটি পাথরের দলা যা অচিরেই গুড়িয়ে যেতে পারে। তবে এ কথার তেমন কোন প্রমান, সত্যতা বা থিওরি পাওয়া যায়নি এখন পর্যন্ত।

দ্যা মুন ইফেক্টঃ
পৃথিবীর উপর চাঁদের প্রভাদ কোনভাবেই অস্বীকার করা যায়না। অনেকেই বিশ্বাস করেন পরিপুর্ণ চাঁদ অর্থাৎ চাঁদ যখন পুর্ণ থাকে বা পূর্নিমার রাতগুলোতে চাঁদ মানুষের ভেতর অদ্ভত সব ব্যাপার ঘটায়। যদি বিজ্ঞান এসবের কোন ব্যাখ্যা দেয় না। তবে আর কিছু করতে না পারলেও বিজ্ঞানীরা একটি জিনিষ নিশ্চিত করেছেন আর সেটি হলো চাঁদ আমাদের ঘুমানোর প্রাত্যহিক রুটিন গড়বড় করে দিতে পারে। ইউনিভার্সিটি অফ বেজেল (সুইজারল্যান্ড) – এর একটি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় এটির প্রমান পাওয়া গিয়েছে। ১০০ ভলান্টিয়ারের উপর এই গবেষনায় দেখা গিয়েছে পুর্নিমার সময় মানুষের ঘুমের খুব বেশী সমস্যা হয়, স্বাভাবিক রুটিনটি ঠিক থাকেনা আর অন্যান্য সময়ে ঘুম মোটামুটি ঠিক থাকে। এ থেকে আরেকটা ব্যাপার বের হয়ে আসে। যদি পুর্নিমার সময় ঠিক মত ঘুম না হয় তাহলে মানুষের মাথায় হেলুসিনেশন হতে পারে আর তারা উল্টোপাল্টা আচরন করতে পারে বা দেখে। কারন ঘুম কম হলে মানুষের মাথা ঠিক ঠিক মত কাজ করে না। আর সেই কারনেই হয়তো পুর্নিমার সময় দুনিয়ার সব ভৌতিক ব্যাপার স্যাপারের কথা বলা হয়।

চাঁদের উৎপত্তি কোথায়?
চাঁদ আসলে এসেছে কোথা থেকে? এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর এখনো কারও জানা নেই তবে কিছু বিদ্বান ব্যাক্তি মাঝে মধ্যেই কিছু থিওরি দিয়ে গেছেন। এ নিয়ে মোটামুটি ৫টি থিওরি এখন পর্যন্ত পাওয়া গেছে। The Fission Theory এর মতে চাঁদ ছিল পৃথিবীর একটি অংশ যে পৃথিবীর ইতিহাসের প্রথম দিকে আলাদা হয়ে গিয়েছিল। তাদের মতে চাঁদ ছিল প্রশান্ত মহাসাগরের একটি অংশ। The Capture Theory  মতে চাঁদ ছিল ভেসে বেড়ানো কোন বস্তু যা পৃথিবীর গ্রাভিটেশন জোনে আসার পর আটকে যায় আর সেই থেকে চাদ আছে আমাদের সাথে। Ejected Ring Theory; এর মতে চাঁদের জন্ম হয়েছিল কোন আরেকটি গ্রহের সাথে সংঘর্ষের ফলে আর সংঘর্ষ হয়েছিল আমাদের পৃথিবীর সাথে।
এগুলো ছাড়াও চাঁদ নিয়ে রহস্য আর অজানা ব্যাপারের কমতি নেই। তবে যাই হোক না কেন, চাঁদ তো চাঁদই। মাটি থেকে আকাশের চাদ দেখার আনন্দটাই অন্যরকম। আর সে যদি হয় ঈদের চাঁদ তাহলে তো কথায় নেই। কোন একদিন আমাদের দেশ থেকেও চাঁদে মহাকাশযান পাঠানো হবে আর আমরাও হয়তো চাঁদে ভ্রমন করতে পারব। হয়তো দিবা-স্বপ্ন তবুও ভাবতে দোষ কি?

বি:দ্র: প্রতিটি লেখার নিয়মিত আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুকপেজ-এ লাইক দিন এবং বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। যেকোন বিষয়ে জানতে চাইলে এবং আপনার কোন লেখা প্রকাশ করতে চাইলে আমাদের ফেসবুক পেজ বিডি লাইফ এ যেয়ে ম্যাসেজ করতে পারেন।

খবরগুলো আপনার ফেসবুক হোমপেজে নিয়মিত আপডেট পেতে লাইক করুন