ইভ-টিজিং

অত্যান্ত দু:খের সাথে জানাচ্ছি যে, আমি যতটা খেয়াল করে দেখেছি, ইভ-টিজিং এর জন্য আপনাদের মধ্যে কিছু মানুষ আছে, তারাই দায়ী। আমি একটা ছেলে, সেই জন্য ভাববেন হয়তো আমি আপনাদের বিপক্ষে বলছি, কিন্তু না। আমি আপনাদের পক্ষেই বলছি। আমরা ছেলেরা মেয়েদের প্রতি একটু বেশিই আকৃষ্ট হই। জানিনা, মেয়েরা কতটুকু ছেলেদের দেখে আকৃষ্ট হয়। আপনারা যখন রাস্তায় বা বাড়ির বাহিরে বের হন, তখন যদি একটু শর্ট ড্রেস না পরে একটু আমাদের দেশীয় পোষাক পরে বের হন। আজকাল রাস্তায় বের হলেই যত মেয়েদের দেখি, তার ৯০% মেয়েরাই ওড়না গলায় জড়িয়ে রা্খেন। আচ্ছা, আপনারা ওড়না-টা ব্যবহার করেন কেন? সেটা নিশ্চই বলতে হবে না। যদি এই ওড়না-টা দিয়ে তার উদ্দেশ্য সাধন না হয়, তবে কেন আপনারা এটা ব্যবহার করেন? বিনা কারনে গলায় জড়িয়ে রেখে দিয়ে গরমের মধ্যে ঝামেলা পোহানোর কি দরকার আছে?

এবার ২য় কথায় আসি। গুলশান, বনানী, ধানমন্ডি ফার্মগেট এলাকায় গেলেই দেখাযায় আপনারা টি-শার্ট, জিন্স পড়ে বের হন। আপনারা কি জানেন, ছেলেরা মেয়েদের উপর পাশ দেখলেই বেশি উত্তেজিত হয়? (দু:খিত, সবকিছু খুলে লিখতে পারলাম না)। তাহলে আপনারা বলতে চাচ্ছেন, আপনারা ছেলেদের উত্তেজিত করার জন্যই এসব পরেন। ঠিক আছে, মেনে নিলাম। এখন কোন ছেলে যদি আপনাদের এমন পোষাক দেখে আপনাদের কটুক্তি করে, তার জন্য দায়ী কে? ছেলেরা, না মেয়েরা? একজন বোরকা পড়া মেয়েকে কি কখনও ইভ-টিজিং করতে দেখেছেন? মাফ করবেন, আমি আপনার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে সমালোচনা করে ফেলেছি। এটা তো শুধু বললাম সামাজিক অবস্থা।

এবার আসি ধমীয় কথায়। আপনারা যারা এসব পোষাক পড়ে বের হন, আপনারা কি সত্যিই মুসলমান? অন্য ধর্মের কথা আমি বলব না, কারন আমি সেটা জানি না। কোন ধর্মের নারীদের পোষাক কেমন হবে, আমি বিস্তারিত জানি না। শুধু মুসলমান ধর্মের কিছুটা বলব, মহান আল্লাহ নিজে সুন্দর, তিনি পছন্দ করেন সুন্দর, আর তাই তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন সুন্দর আকৃতিতে। অতঃপর এই সুন্দর আকৃতির মানুষগুলোর সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য তিনি সুন্দর পোষাকের ব্যবস্থা করেছেন। আল্লাহ পাক মহগ্রন্থ আল-কোরআনে বলেছেন- হে আদমের সন্তানগন! আমরা তোমাদের নিকট পোষাক পাঠিয়েছি। তোমদের দেহের গোপনাঙ্গ ঢেকে রাখার জন্য এবং সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য। সর্বোত্তম পোষাক হচ্ছে খোদা ভক্তির পোষাক (সুরাঃ আল-আরাফ, আয়াত-২৬)।

মহান আল্লাহ তায়ালা স্ত্রীলোকদের ওড়না পরার নির্দেশ দিয়ে ঘোষনা করেছেন- মুসলিম নারীদেরকে বলুন যেন তাদের দৃষ্টি সংযত করে ও তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে, তারা যেন যা সাধারনতঃ প্রকাশ পায় তা ব্যাতীত তাদের সাজসজ্জা ও সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে, তাদের গ্রীবা ও বক্ষদেশ যে মাথার ওড়না দিয়ে আবৃত করে (সুরাঃ নূর, আয়াত- ৩১)
এখন বলুন, আপনারা যে পোষাক পরেন, সেটা কি ইসলাম সমর্থন করে? আপনি বলবেন আপনি মুসলমান। তাহলে যেই পোষাক-টা পরছেন, এটার অনুমতি কোথায় আছে? আমাদের দেশের সংস্কৃতিতে?

হায়, আপনি বাংলাদেশে থাকেন, আবার নিজেকে মুসলমান বলে দাবি করেন। কিন্তু আমি আপনার কথা বলব না। আমার কথাই বলি। ঠিকমত তো নামাজ পড়বই না, আল্লাহর কোন নিয়ম মেনে চলব না। বড়দের সম্মান করব না, আবার নিজেকে বাংলাদেশী বলে দাবী করব, মুসলমান বলে দাবী করব। পহেলা বৈশাখে পানতা-ইলিশ খাব, বিভিন্ন মঞ্চে বড় বড় বক্তিতা দিব ইত্যাদি। কেমন আমরা?

একটি উদাহরন দেই। একজন ক্ষুধার্ত মানুসের সামনে যদি এক প্লেট খাবার রেখে এই মানুষকে বলা হয়, তুমি এই খাবার খেতে পারবে না। যদি খাও, তবে তোমাকে ১০০টা বেতের বারি মারা হবে। লোকটা কি করবে? দেখা যাবে, সে কিন্তু কিছুক্ষণ পর ঠিক-ই খারাব-টা খেয়ে নিবে। কারন, সে ভাববে, আগে খেয়ে নেই, পরে যেটা হয়, দেখা যাবে।
ঠিক তেমনি আপনারা মেয়েরাও। ছেলেরা হল ক্ষুধার্ত মানুষ, আর আপনারা মেয়েরা হলেন তাদের খাদ্য।
তাই প্লিজ বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় একটু খেয়াল রাখুন এসব বিষয় গুলো। আপনি পরীক্ষা করে দেখতে পারেন, একবার একটু সংযত হয়ে চলুন আর একবার অ-সংযত হয়ে চলুন। কোনটার প্রতিক্রিয়া কেমন।
দু:খিত আপুরা, আপনাদের অনেক কথা বলে ফেললাম।

ভাইয়া, এবার আপনাদের কিছু বলি। আমার কোন বোন নেই, তাই বোনের ভালবাসা কেমন হয়, আমি জানি না। কিন্তু কিছুটা হলেও উপলদ্ধি করতে পারি। একবার ভাবুন-তো, আপনার বোনটি যদি রাস্তায় কোন ছেলের কাছে কটুক্তির শিকার হয়, আপনি কি তাকে ছেড়ে দিবেন? অবশ্যই না। ‌তাই যখন কোন মেয়েকে উত্তক্ত করবেন, তখন ভাবুন আপনার বোন-কে কেও এমনটি করছে। আপনার কোন নিকট আত্মিয়-কে কেও হয়তো উত্তক্ত করছে।
তাই, কটুক্তি করার আগে একটু ভাবুন।

কিছু কিছু ব্যক্তিগত কাজ আছে, যেগুলো করলে সেই কাজ গুলো আর ব্যক্তিগত থাকে না। তাই আবার আপুদের বলছি, এখন আপনারা বলবেন, আমরা এমন পোষাক পরেছি, তো ছেলেদের একটু সংযত থাকলেই হয়। হ্যাঁ, আপনি ঠিকই বলেছেন। আপনি যদি ছেলেদের কিছু বলা বা করার-ই সুযোগ না দেন, তাহলে কি সমস্যা বেশি হবে?
আরও একটা কথা বলছি, আপনাদের দেহ-টা প্লিজ প্রদর্শণ করবেন না। হয়তো আপনাদের সমস্যা হচ্ছে না, কিন্তু রাস্তায় কিছু ছেলেরা আছে, তাদের অনেক সমস্যা হয় আপনাদের দেখে।

আমি অত্যান্ত দু:খের সাথে আপনাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। ভুল হলে ক্ষমা করে দিবেন। তবে রাতে বিছানায় শুয়ে শুয়ে আমার কথাগুলো একটু চিন্তা করুন। ১০ মিনিট ভেবে দেখুন, এর ফল কি ভাল না খারাপ। আপনারা কমেন্ট করুন। আপনাদের কমেন্টের উপর নিভর করছে আরও কিছু পোস্টের।

বি:দ্র: প্রতিটি লেখার নিয়মিত আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুকপেজ-এ লাইক দিন এবং বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। যেকোন বিষয়ে জানতে চাইলে এবং আপনার কোন লেখা প্রকাশ করতে চাইলে আমাদের ফেসবুক পেজ বিডি লাইফ এ যেয়ে ম্যাসেজ করতে পারেন।

খবরগুলো আপনার ফেসবুক হোমপেজে নিয়মিত আপডেট পেতে লাইক করুন